বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন প্রতিটি মানুষের একটি জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে স্মার্টফোন ছাড়া কেউ চলতে পারে না। তাই কেউ না কেউ স্মার্টফোন কেনার আগে অবশ্যই তাকে যে জিনিসগুলো জানতে হবে এবং অবশ্যই জিনিসগুলো মনে রাখতে হবে।
যদি আপনি মোবাইল কেনার আগে এই জিনিসগুলো না দেখে নেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ঠকতে হবে। মোবাইল ফোন বিক্রয়ের দোকানগুলোতে আপনাকে উল্টোপাল্টা বুঝিয়ে বিভিন্ন রকম লোকাল মানের ফোন আপনাকে দিতে পারে। মোবাইল (স্মার্টফোন) কেনার আগে করণীয়। জিনিস অবশই দেখবেন।
তাই, আপনার প্রিয় স্মার্টফোনটি কিনা আগে অবশ্যই যে কাজগুলো করনীয় সেগুলো আপনাকে পালন করতে হবে। আপনি বিভিন্ন কৌশল এবং টেকনিক ব্যবহার করে সে বিষয়গুলো জেনে আপনার প্রিয় ভালো ফোনটি কিনতে পারবেন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি মোবাইল ফোন কিনার আগে আর কোনদিন আপনাকে কেউ ঠকাতে পারবেনা।
আপনার স্মার্টফোন কিনার আগে যে মূলত চারটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে সেগুলো হলো- আপনার মোবাইলের প্রসেসর, মোবাইলের স্টোরেজ, র্যাম এবং ডিসপ্লে ইত্যাদি বিষয়গুলো অবশ্যই পর্যবেক্ষণ করে, আপনাকে একটু ফোন কিনতে হবে।
- প্রসেসর
- স্টোরেজ
- র্যাম
- ডিসপ্লে
আসুন জানা যাক মোবাইল প্রসেসর এর প্রকারভেদ
মোবাইলের কার্যক্রম দক্ষতার ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকারের প্রসেসর পাওয়া যায় এবং প্রসেসরের প্রকারভেদ গুলো নিয়ে দেয়া হলো-
- ডুয়াল কোর
- হেক্সা কোর
- অক্টা কোর
- Quad-core
জানতে পারছেন যে, মোবাইলের নামের ভিত্তিতেই শুধু ভালো হয় না গুণের ভিত্তিতেই ভালো হয়। বেশি থাকে অবশ্যই ভালো হবে। যে বুঝেছে চুরি করে সংখ্যা বেশি হবে সেই বুঝেছো আর কার্যদক্ষতা এবং পারফরম্যান্স অনেক ভালো আসবে।একটি মোবাইলে ডুয়াল কোর প্রসেসর থেকে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যায় হেক্সা কোর বা অক্টা কোর প্রসেসর ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে। তবে আপনি যদি সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স পেতে চান তাহলে, অক্টাকোর এর প্রসেসর গুলো সেরা প্রসেসর।
মোবাইলের কোন প্রসেসর সবচেয়ে ভালো?
মোবাইলের কেনার সময় অবশ্যই করনীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মোবাইলের প্রসেসর নির্বাচন করা। আপনার অনেকেই জানতে চেয়েছেন কোন প্রসেসর সবচেয়ে ভালো। মোবাইলের করার ভিত্তিতে অবশ্যই মোবাইলের প্রসেসর নির্ণয় করা হয় সে ক্ষেত্রে কোরসংখ্যা(Cores) প্রসেসরের কোরসংখ্যা যত বেশি হয়, স্মার্টফোন তত দ্রুত কাজ করে।
মোবাইলে কোন ক্যামেরা সবচেয়ে ভাল?
আমরা মোবাইল কিনার আগে অবশ্যই মনে করি যে মোবাইলের ক্যামেরার মেগাপিক্সেল বেশি হবে সেই মোবাইলে অবশ্যই ক্যামেরা ভালো হবে। এটা আমার মনে হয় মোটেও ঠিক নয় মোবাইলের ক্যামেরার কোয়ালিটির উপর মোবাইলের ক্যামেরার ছবি ভালো হয়। নিত্য পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করলে আপনি ভালো ক্যামেরা চেনার সহজ উপায় গুলি জানতে পারবেন। আলোচনা গুলো করার জন্য বলা হলো-
- যে মোবাইলে লেটেস্ট স্টোরেজ টাইপ ইমেজ ব্যবহার করা হয়েছে সে মোবাইল অবশ্যই ক্যামেরা ভাল হবে।
- লেন্স,ইমেজ সেন্সর কে বলা হয় ক্যামেরার হৃদপিণ্ড। তবে স্বনামধন্য মোবাইল কোম্পানি, সনি এবং স্যামসাং মোবাইলে ইমেজ সেন্সর ব্যবহার করেছে। ক্যামেরার অ্যাপারচার যত কম হবে কম আলোতে ছবি তত ভাল উঠবে।
- যে ক্যামেরার মধ্যে সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন ব্যবহার করা আছে সেই ক্যামেরা অবশ্যই ভালো হবে কারণ ছবির ডিটেলস ছবির লেন্স ছবির এস্টাবলিশমেন্ট ইত্যাদি সঠিকভাবে অপটিমাইজেশন করা হয়।
মোবাইলে কোন ব্যাটারী সবচেয়ে ভাল?
ব্যাটারির সাইজ বা ব্যাটারি এম্পিয়ার অনেক বেশি হলেই মোবাইল ভালো চার্জ থাকবে এ কথা মূলতই ঠিক নয়। ৫০০০ এম্পিয়ার ব্যাটারি থেকে ৪০০০ এম্পিয়ার ব্যাটারী অনেক ভালো চার্জ থাকে। এটি মূলত হয়ে থাকে ব্যাটারির কোয়ালিটির কারণে। অবশ্যই আপনাকে ভালো কোয়ালিটির ব্যাটারি দেখে মোবাইল কিনতে হবে, তাহলে আপনার মোবাইলে চার্জ এর ব্যাকআপ অনেক ভালো পাবেন।
যে মোবাইলের ব্যাটারিতে যত বেশি এম্পিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে সেই মোবাইলের ব্যাটারি তথ্য বেশি ভালো এবং ব্যাটারি ব্যাকআপ তত ভালো থাকে। আবার মোবাইলের প্রসেসর এর ন্যানোমিটার প্রযুক্তি যত কম,ব্যাটারী ব্যাকআপ তত বেশি পাবেন। AMOLED টাইপের ডিসপ্লে ব্যাটারি ব্যাকআপ অনেক বেশি দেয়।
মোবাইলের কোন র্যাম সবচেয়ে ভালো?
আপনারা অনেকেই মোবাইল কি তারা জানেন যে যে মোবাইলের র্যাম এর সংখ্যা বেশি সেই মোবাইল অবশ্যই ভালো পারফরম্যান্স দিবে। যে মোবাইলের র্যাম সংখ্যা বেশি সেই মোবাইল সবসময় ভালো পারফরম্যান্স দেয় না মোবাইলে ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে মোবাইলের এর র্যাম ধরনের উপর ভিত্তি করে পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পায় ।ভালো মানের র্যাম অবশ্যই ভালো ম্যাচ পাবেন নিম্নে মোবাইলের চার্জ দেওয়া হলো-
RAM Type | Speed | Voltage |
LP- DDR3 | 1866 MBPS | 1.2V |
LP- DDR4 | 3200 MBPS | 1.1V |
LP- DDR4X | 4267 MBPS | 0.6V |
LP- DDR5 | 6400 MBPS | 0.5v |
মোবাইলের কোন ডিসপ্লে ভালো?
মোবাইলের কয়েকটি অংশের ভিতরে ডিসপ্লে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই মোবাইল কিনার করবে অবশ্যই কোন ডিসপ্লে সবচেয়ে ভালো সেটি জানা অবশ্যই আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দিবে এবং ভালো সেগুলো অবশ্যই আপনাকে নিতে হবে। মূলত চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে তা হলো- টাচ স্যাম্পলিং রেট ,ডিসপ্লে নিটস, ডিসপ্লে রেজুলেশন ও ডিসপ্লে টাইপ।
টাচ স্যাম্পলিং রেটঃ
অবশ্যই আপনাকে ঠিক করতে হবে যে টাচ স্যাম্পলিং রেট ভালো আছে কিনা মোবাইলের পারফরমেন্স তত বৃদ্ধি পাবে। অবশ্যই যে মোবাইলে টাচ স্যাম্পলিং রেট বেশি থাকবে সে মোবাইলটি কেনার চেষ্টা করবেন।
ডিসপ্লে নিটসঃ
অবশ্যই আপনাকে দেখতে হবে. মোবাইলের ডিসপ্লে নিটস(NITS) এটি মোবাইলে ব্রাইটনেস অনেক বেশি দেয় যার কারণে যারা দিনে রাস্তাঘাটে মোবাইল ব্যবহার করে তাদের জন্য এটি মোবাইলে অবশ্যই ডিসপ্লেটি ভালো হবে।
ডিসপ্লে রেজুলেশনঃ
আপনার মোবাইল কিনার আগে অবশ্যই মোবাইলের ডিসপ্লে রেজুলেশন দেখান তো গুরুত্বপূর্ণ। যে ডিসপ্লে রেজুলেশন ও পিপিআই যত বেশি বুঝতে হবে সে মোবাইল ততটা কোয়ালিটি সম্পন্ন।
ডিসপ্লে টাইপঃ
কোন ডিসপ্লে আপনার জন্য ভালো হবে তা নির্বাচন করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইলের Amoled ডিসপ্লে রাতে ব্যবহার করার জন্য খুবই ভালো। Amoled মূলত কম আলো দেয় এবং মোবাইলের ব্যাটারি ব্যাকআপ অনেক ভালো থাকে। Amoled ডিসপ্লে অনেক হালকা হয়ে থাকে LCD ডিসপ্লের থেকে।
মোবাইলে স্টোরেজ কতটুকু নিবেন?
মোবাইলের রেম এর মতোই স্টোরেজ দেখে কেনা উচিত। কেননা বেশি স্টোরিস থাকা মোবাইলের কখনোই ভালো হয় না। ভালো মানের স্টোরেজ বা স্তরে ধরনের উপর ভিত্তি করে মোবাইলে পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পায়। অবশ্যই মোবাইল কেনার আগে স্টোরেজের ধরন দেখে কেনা উচিত। নিম্নলিখিত স্টোরেজের চার্ট দেয়া হলো। আপনি নিজে নিজে দেখে আপনার ফোনের স্টোরেজের প্রকারভেদ দেখে নিন।
স্টোরেজের ধরন |
রিড স্পিড |
রাইট স্পিড |
EMMC 5.1 | 350 MBPS | 150 MBPS |
UFS 2.1 | 860 MBPS | 255 MBPS |
UFS 3.0 | 1260 MBPS | 840 MBPS |
UFS 3.1 | 2100 MBPS | 1200 MBPS |
আশা করি উপরোক্তা আলোচনায় আপনার মোবাইল কিনার আগে কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত তা জানতে পারছেন। একটি ভালো মোবাইল কিনার জন্য যাবতীয় যে তথ্যগুলো জানা দরকার আমরা জানাতে সাহায্য করেছি। আরো কিছু নিত্য নতুন বিষয় জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের কমবক্সে কমেন্ট করতে পারেন ধন্যবাদ।