Krishi Bank Loan Apply Online | কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৪

Krishi Bank Loan Apply Online | কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৪ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে নিচের আর্টিকেলটি পড়তে হবে। কেননা আর্টিকেলটি পড়লে জানতে পারবেন কিভাবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক হতে সহজ শর্তে লোন পাওয়া যায়। এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কোন কোন ধরনের কৃষি লোন প্রদান করে। তাই লোন বিষয়ক তথ্য পেতে নিজের আর্টিকেলের সাথেই থাকুন।

কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম

কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৪

বাংলাদেশ এর অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি। দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশের এই কৃষি প্রধান দেশকে কৃষিকাজে আরও সমৃদ্ধশালী করতে বিভিন্ন ধরনের সংস্থা এবং ব্যাংক কৃষকদের সহজ ঋণ প্রদান করে থাকে। যে সমস্ত সংস্থা এবং ব্যাংকগুলো ঋণ প্রদান করে তার মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।

আরো দেখুন-

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রতিবছর কৃষকদের জন্য সহজ শর্তের ঋণ প্রদান করে থাকে। আজকে আমরা যারা চেষ্টা করব কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে। এছাড়াও আমরা জানবো কৃষি ব্যাংক লোন কত প্রকার? কিভাবে এলনের আবেদন করতে হয়? কৃষি লোন হতে কত টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়? এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য থাকছে আজকের এই আলোচনায়।

লোন পাওয়ার যোগ্যতা কি?

লোন পাওয়ার যোগ্যতা কি?

 

যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যাংক লোন পেতে হলে নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তা না হলে লোনের জন্য আবেদন করা যাবে না। এখানে দেখুন যে ধরনের যোগ্যতা থাকলে একজন ব্যক্তি কৃষি লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন-

  • ২১ বছর বয়স হতে হবে
  • বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে 
  • নিজের আবাদি জমি থাকতে হয়
  • কৃষিকাজে পারদর্শী এমন ব্যক্তি হতে হবে
  • কৃষি ঋণ পাওয়ার পূর্বে অবশ্যই পরিকল্পনার খাত উল্লেখ করতে হবে। যেমন কোন খাতের উপর ভিত্তি করে ঋণ নেবেন সে বিষয়ে উল্লেখ করতে হবে।
  • পূর্বে কোন ব্যাংক অথবা সংস্থা হতে ঋণ গ্রহণ করলে তা আগে পরিশোধ করতে হবে
  • লোন পরিশোধের ব্যবস্থা থাকতে হবে অর্থাৎ ঋণ পরিশোধ করবে এমন পরিমাণ অর্থ, চাকরি কিংবা ব্যবসা থাকতে হবে
  • অর্ধ পাগল অথবা প্রতিবন্ধী হওয়া যাবে না
  • দেউলিয়া ব্যক্তি অথবা ঘরবাড়ি নেই এমন ব্যক্তি ঋণ পাওয়ার জন্য যোগ্য হবে না

কৃষি ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ

এখন পর্যন্ত কৃষি ব্যাংক তিন ধরনের লোন পদ্ধতি চালু রেখেছে । এই তিন পদ্ধতির মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই তবে শুধুমাত্র সময়ের পার্থক্য বিদ্যমান । এই তিন ধরনের ঋণ পদ্ধতি হলো –

স্বল্প মেয়াদী ঋণ

মধ্যম মেয়াদী ঋণ

দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ

স্বল্প মেয়াদী কৃষি ঋণ সম্পর্কে বিস্তারিত

স্বল্প মেয়াদী কৃষি ঋণ সম্পর্কে বিস্তারিত

 

স্বল্প মেয়াদী কৃষি ঋণ বলতে মৌসুমী ঋণ কে বোঝানো হয়ে থাকে। যে সমস্ত কৃষক স্বল্প মেয়াদে একটি ফসল বা মৌসুম এর জন্য ঋণের আবেদন করেন সেই সমস্ত ঋণ হচ্ছে স্বল্পমেয়াদী। এক্ষেত্রে লোন নেওয়ার পর থেকে এক মৌসুম সময়ের পর লোন পরিশোধ করতে হবে।

লোন এর সময়কাল

স্বল্প মেয়াদী লোন মূলত ৬ মাস থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় হয়ে থাকে

স্বল্প মেয়াদি ঋণ সুধের হার

অন্যান্য লোনের তুলনায় স্বল্পমেয়াদি লোনের ক্ষেত্রে খুব কম পরিমাণ সুদের হার রয়েছে। এই লোনের ক্ষেত্রে শতকরা হার ৮ শতাংশ।

লোন এর ক্ষেত্র সমূহঃ

কৃষি ব্যাংক স্বল্প মেয়াদের ঋণ নিয়ে প্রকল্পের আওতায় যে সমস্ত ফসল 6 থেকে 18 মাসের মধ্যে পরিপক্ক হয়ে যায় সে সমস্ত ফসলের ক্ষেত্রে এ ঋণ প্রদান করা হয়।

যেমন ধান, পাট, গম, আলু,  ভুট্টা সহ আরো বিভিন্ন রকম ফসল যেগুলো এক মৌসুমে তোলা সম্ভব। অর্থাৎ এগুলোকে মৌসুমী  ফসল বলা হয়ে থাকে।

স্বল্প মেয়াদী লোন এ যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে

 

  • আবেদনকারীর দুই কপি ছবি
  • ভোটার আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট এর ফটোকপি
  • ইউনিয়ন পরিষদ হতে নাগরিকত্ব সনদ
  • যে জমির উপর নির্ভর করে লোন এর আবেদন করবেন সে জমির খতিয়ান নং
  • সে জমির খাজনা আদায়ের রশিদ
  • নিজস্ব জমি হলে জমি সম্পর্কিত কোন কাগজ লাগবে না
  • অন্যের নিলামি জমি হলে অবশ্যই জমি নিলামে নেওয়ার কাগজপত্র দেখাতে হবে
  •  ইজারা জমি হলে অবশ্যই খাযনার  দলিলসহ হেবাপত্র বা দানপত্র লাগবে।

 

স্বল্প মেয়াদি লোন এর আবেদন

লোন আবেদন করতে প্রথমে কৃষি ব্যাংক আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। পরবর্তীতে আবেদন ফরম সঠিকভাবে নির্ধারিত তথ্যগুলো দিয়ে পূরণ করতে হবে। এবং সেই সাথে আবেদনপত্র উল্লেখিত সকল ধরনের কাগজপত্র গুলো সংযুক্ত করতে হবে।

এরপর নির্ধারিত সময়ে কৃষি ব্যাংকের যে শাখায় লোন নিতে ইচ্ছুক সে শাখায় আপনার আবেদন পত্র জমা করতে হবে।

আবেদন পত্র জমাদানের পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদন পত্র যাচাই-বাছাই  করার পর সকল তথ্য সঠিক হলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে। এবং ১০ থেকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কৃষি লোন পেয়ে যাবেন।

মধ্যম মেয়াদী ঋণ সম্পর্কে বিস্তারিত

মধ্যম মেয়াদী ঋণ সম্পর্কে বিস্তারিত

 

স্বল্পমেয়াদি এবং মধ্যমেয়াদী ঋণের মধ্যে তেমন বেশি পার্থক্য নেই। সব ডকুমেন্ট এবং যোগ্যতা একই রকম। শুধুমাত্র সময়ের পার্থক্য বিদ্যমান। মধ্যমেয়াদি ঋণ সম্পর্কে যে সমস্ত তথ্য গুলো অবশ্যই জানতে হবে-

লোন এর সময়কাল

মধ্য মেয়াদী লোন মূলত এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। এ লোন পরিষদের সর্বোচ্চ সময়কাল পাঁচ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

মধ্যম মেয়াদি ঋণ সুধের হার

পূর্বেই বলেছি কৃষি ব্যাংক সহজ শর্তে এবং খুব কম সুদে কৃষকদের ঋণ প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে মধ্যমেয়াদী ঋণের শতকরা হার ৮ থেকে ৯ শতাংশ।

লোন এর ক্ষেত্র সমূহঃ

মধ্যমেয়াদী ঋণ প্রকল্পের সাথে জড়িত যে সমস্ত বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে ঋণ প্রদান করা হয় তাহা হলো-

 

ক্ষুদ্র ব্যবসা

ক্ষুদ্র শিল্প

ক্ষুদ্র কৃষি খামার

হাঁসের খামার

পোল্ট্রি ফার্ম

শেষ প্রকল্প

মৎস্য চাষ

চিংড়ি চাষ

হাওরের মাছ চাষ

কৃষি যন্ত্রপাতি/ খামার যন্ত্রপাতি

তাঁত শিল্প

 

লোন আবেদন এ যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে

স্বল্প  মেয়াদী ঋণের ক্ষেত্রে যে সমস্ত কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়েছে ঠিক একই রকম কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে এ ঋণের আবেদন করতে। তবে মধ্যমেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠান করতে গেলে নিতে হলে সে প্রতিষ্ঠানের  ট্রেড লাইসেন্স দেখাতে হবে।

লোন এর আবেদন পদ্ধতি

আবেদন করার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আবেদন পত্র সংগ্রহ করতে হবে। চাইলে কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া যে কোনো শাখা হতে আবেদন পত্র পাওয়া যাবে।

আবেদনপত্র পাওয়ার পর সকল ধরনের তথ্য দিয়ে আবেদন পত্র পূরণ করে কৃষি ব্যাংকের শাখায় জমা দিতে হবে।

দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ সম্পর্কে বিস্তারিত

দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ সম্পর্কে বিস্তারিত

 

দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রকল্প, যে প্রকল্প গুলো বেশি সময় ধরে চালু রাখা সম্ভব সেগুলোর উপর ভিত্তি করে ঋণ প্রদান করা হয়। এই সম্পর্কে আরও বিস্তারিত যে তথ্যগুলো জানা উচিত-

লোন এর সময়কাল

দীর্ঘ মেয়াদী লোন মূলত পাঁচ বছরের উর্ধে হয়ে থাকে। এ লোন পরিষদের সময়কাল পাঁচ বছরের উর্ধে নির্ধারণ করা হয়েছে।

দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ সুধের হার

পূর্বেই বলেছি কৃষি ব্যাংক সহজ শর্তে এবং খুব কম সুদে কৃষকদের ঋণ প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের শতকরা হার ৮ থেকে ৯ শতাংশ।

লোন এর ক্ষেত্র সমূহঃ

 

গবাদী পশুর খামার

হাঁস-মুরগী পালন

দুগ্ধ খামার

মৎস্য খামার

চা বাগান

ফলের বাগান

কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন

রাবার চাষ

প্রকল্প ঋণ

বড় কৃষি প্রকল্প

 

যেভাবে আবেদন করলে দ্রুত লোন পাওয়া যায়

লোন আবেদন করার পূর্বে লোন এর ক্ষেত্র সমূহ উল্লেখ করতে হবে। যেহেতু কৃষি ক্ষেত্রে এই ব্যাংক সবচেয়ে বেশি লোন প্রদান করে সেহেতু লোন আবেদনের পূর্বে গ্রাহককে কৃষি প্রজেক্ট সম্পর্কে উল্লেখ করতে হবে। যেই কৃষি ক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে লোন নিতে ইচ্ছুক সেই ক্ষেত্রে সমূহ উল্লেখ করলে খুব দ্রুত লোন পাওয়া যায়।

শেষ কথা

একজন আবেদনকারী যদি উপরের আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি  লোন পাওয়া সম্পর্কিত সকল ধরনের তথ্য জানতে পারবেন। এবং কিভাবে লোন এর জন্য আবেদন করবেন সে সম্পর্কেও জানতে পারবেন। পরবর্তীতে আরও বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক লোন পেতে আমাদের  ওয়েবসাইট দেখতে পারেন। এখানে আমরা চেষ্টা করেছি বিভিন্ন ব্যাংকের লোন বিষয়ক তথ্য দেওয়ার জন্য।

Leave a Comment